You are currently viewing অক্টোবরের মাঝামাঝি শুরু হচ্ছে কারখানা পর্যবেক্ষণ; বিডায় সেফটি সেল গঠণের আহ্বান এফবিসিসিআই সভাপতির

অক্টোবরের মাঝামাঝি শুরু হচ্ছে কারখানা পর্যবেক্ষণ; বিডায় সেফটি সেল গঠণের আহ্বান এফবিসিসিআই সভাপতির

  • Post comments:0 Comments

অক্টোবরের মাঝামাঝি শুরু হচ্ছে কারখানা পর্যবেক্ষণ; বিডায় সেফটি সেল গঠণের আহ্বান এফবিসিসিআই সভাপতির

বুধবার সকালে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সকল শিল্প কারখানা পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শন পদ্ধতি ও চেকলিস্টের ওপর ব্রিফিংয়ে এ আহ্বান জানান ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে প্রচারিত ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, কারখানার নিরাপত্তাজনিত বিষয়ে অনেকগুলো সংস্থার কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। বিডায় সেফটি সেল স্থাপনের মাধ্যমে ওয়ান স্টপ সার্ভিস পেলে উদ্যোক্তাদের হয়রানি কমার পাশাপাশি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা সহজ হবে। অক্টোবরে শুরু হওয়া কারখানা পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে সব ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এর মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে দেশের শিল্পখাত উপকৃত হবে।

এসময় এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি জনাব মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, সংস্কার কার্যক্রমে কিছুটা অর্থ ব্যয় হলেও, তার সুফল পাচ্ছে দেশের রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্প। দেশের অন্য শিল্পখাতকেও নিরাপদ করতে বিডার সাথে এই উদ্যোগে যৌথভাবে কাজ করছে এফবিসিসিআই। তিনি বলেন, কারখানায় দুর্ঘটনা হলেই মালিকদের দোষারোপ করা হয়। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে যেসব সংস্থা লাইসেন্স দিয়ে থাকে তাদেরকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। নিমতলীর অগ্নিদুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, আলাদা কেমিক্যাল পল্লী গঠিত হলে, চুড়িহাট্টায় আগুনের দুর্ঘটনা ঘটতো না। পোশাকশিল্পের মতোই অন্য খাতগুলোকেও নিরাপদ করে তুলতে দেশব্যাপী পরিদর্শন কার্যক্রমে এফবিসিসিআই’র সদস্যভুক্ত ৮০টি চেম্বার ও ৪০৬টি অ্যাসোসিয়েশন সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে বলে জানান মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। এসময় তিনি কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানিতে রপ্তানিমুখী শিল্পের সাথে অন্য শিল্পের শুল্ক বৈষম্য দূর করতে এফবিসিসিআই উদ্যোগ নেবে বলে আশ্বাস দেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি জনাব এম এ মোমেন। তিনি বলেন, পরিদর্শনের চেকলিস্ট দেখে উদ্যোক্তাদের ভয় পাবার কিছু নেই। শিল্পমালিকদের সহায়তা করার জন্যই এই উদ্যোগে অংশীদার হয়েছে এফবিসিসিআই। এই পদক্ষেপ সফল হলে, তৈরি পোশাকের মতোই দেশের সব শিল্প নিরাপদ হবে। যা বিদেশে বাংলাদেশের সুনাম বাড়াবে, বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সহায়ক হবে।

দেশের শিল্পায়ন অগ্রগতি অনেকটা অনানুষ্ঠানিকভাবে হয়েছে উল্লেখ করে, এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি জনাব মোঃ আমিন হেলালী বলেন, এখন সব শিল্পে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার সময় এসেছে।

সমন্বিত পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে যেসব কারখানার কর্মপরিবেশের মান সন্তোষজনক হবে, তাদেরকে আলাদা সনদ দেয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি মোঃ হাবীব উল্লাহ ডন।

অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোহাম্মাদ মাহফুজুল হক বলেন, ‘পরিদর্শন’ শব্দের পরিবর্তে ‘জরিপ’ অথবা ‘পর্যবেক্ষণ’ ব্যবহার করলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভীতি কমে আসবে বলে মন্তব্য করেন।

এর আগে অনুষ্ঠানে অনলাইনে অংশ নিয়ে বিডার নির্বাহী সদস্য জনাব অভিজিৎ চৌধুরী উদ্যোক্তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, এই পরিদর্শনের কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্যে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা। কোনভাবেই কাউকে হয়রানি করা হবেনা।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুলফিকার রহমান জানান, এই কর্মসূচির মাধ্যমে কোন ব্যবসায়ীকে ধরা হবেনা। বরং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে, কারখানাগুলোকে নিরাপদ করতে উদ্যোক্তা, অ্যাসোসিয়েশন এবং সরকারি পর্যায়ে খাত ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।

অনুষ্ঠানে কলকারখানা পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণের প্রেক্ষাপট ও পদ্ধতি, খাতভিত্তিক অগ্রাধিকার তালিকা ও চেকলিস্টের ওপর তিনটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপিত হয়।

এফবিসিসিআই সেফটি কাউন্সিলের উপদেষ্টা ব্রিগ্রে. জেনারেল (অবঃ) আবু নাঈম মোঃ শহীদুল্লা’র উপস্থাপিত কলকারখানা পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণের প্রেক্ষাপট ও পদ্ধতি পর্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে ২৪ সদস্যের জাতীয় কমিটি, বিডার নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি ও তিনটি উপ-কমিটি সম্পর্কে জানানো হয়। বলা হয়, ৬৮ ধরনের শিল্পখাতকে অন্তর্ভুক্ত করে, দুর্ঘটনা ও ঝুঁকি বিবেচনায় ৩২টি খাতকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি খাতের সমন্বতি পরিদর্শন কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে মোট ৪৬ হাজার ১’শ টি কারখানাকে। তবে প্রথম তিন মাসে ৫ হাজার কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। পর্যবেক্ষণে যাওয়ার তিন দিন আগে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানানো হবে।

২য় পর্বের উপস্থাপনায় অগ্রাধিকার তালিকার অন্তর্ভুক্ত শিল্প সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন সেফটি অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের সভাপতি জনাব ব্রিগে. জেনারেল (অবঃ) ইঞ্জিনিয়ার আলি আহমেদ খান।

৩য় পর্বে, পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে কোন কোন বিষয়গুলো যাচাই বাছাই করা হবে, তার চেকলিস্ট সম্পর্কে অবহিত করেন আইওটা কনসাল্টিং বিডি’র ফাউন্ডার ও সিইও এবং সেফটি অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের সদস্য জনাব মোঃ গোলাম কিবরিয়া।

মুক্ত আলোচনায়, এফবিসিসিআই’র পরিচালকরা, কারখানা পরিদর্শনের নামে অহেতুক হয়রানি না করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে নিরাপত্তা সামগ্রির শুল্ক কাঠামো ও বাজার দর কমানোর সুপারিশ করেন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.