বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ভিত্তি গড়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু:
মোঃ জসিম উদ্দিন।
বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২১ উপলক্ষ্যে এফবিসিসিআই’র ”বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শন: শিল্প ও বাণিজ্য উন্নয়নে বাংলাদেশ” শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারের স্বাগত বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সভাপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন দেশ পুনর্গঠনে মনযোগ দিয়েছিলেন, যখন তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা আর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই এ দেশীয় অপশক্তির ঘাতকের বুলেট কেড়ে নেয় বাঙালীর মুক্তির কান্ডারী শেখ মুজিবুর রহমানকে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, ভঙ্গুর অর্থনীতি, বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু সময় পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে তিন বছর। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেই মাথাপিছু আয় ৯৩ ডলার থেকে ২৭১ মার্কিন ডলারে উন্নীত করেছিলেন। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন তাতেই প্রতিফলিত হয়েছিল তার গণমুখী আধুনিক দর্শন।
‘বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শন: শিল্প ও বাণিজ্য উন্নয়নে বাংলাদেশ’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ বঞ্চনা দেখে, ১৯৪৭ সাল থেকেই স্বাধীনতার বীজ বুনেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নানা ঘাত প্রতিঘাত পার হয়ে দেশকে স্বাধীন করার পর, জাতির পিতা একটি শোষণ বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তাঁর অর্থনৈতিক দর্শনের মূল কথা ছিলো সাধারণ মানুষের মুক্তি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব, সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা জনাব তোফায়েল আহমেদ এমপি। তিনি জানান, আজকের বাংলাদেশ যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, তার মূল ভিত্তি গড়ে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কৃষি, ব্যাংক-বিমা, বিদ্যুৎ- যোগাযোগ, সব বিষয়ে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা করে গেছেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি। ষড়যন্ত্রকারীদের নির্মম হত্যাযজ্ঞে, বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের অকাল প্রয়ানে সদ্য জন্মানো রাষ্ট্রের পূনর্গঠন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়েছে। কিন্তু ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে, উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব এম এ মান্নান এমপি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা জনাব সালমান এফ রহমান এমপি।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এখনও সরকারি যেসব পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়, সেগুলো জাতির পিতার দিয়ে যাওয়া নির্দেশনার আলোকেই বাস্তবায়িত হচ্ছে। উন্নয়ন দর্শন, পরিকল্পনা, ও বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু এখনও বেঁচে আছেন বাংলাদেশের প্রতিটা অগ্রযাত্রায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা জনাব সালমান এফ রহমান এমপি সেমিনারে বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী বাস্তবতায় পাকিস্তানীদের ফেলে যাওয়া কলকারখানা জাতীয়করণ করেছেন, কিন্ত দেশ স্থিতিশীল হওয়ার পরে, সরকারি- বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে একটি ভারসাম্যমূলক অর্থনীতি গঠন করাই ছিলো বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শন।
এর আগে প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, জনাব এ. কে আজাদ, জনাব মোঃ শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এমপি এবং মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির।
সেমিনারে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন এফবিসিসিআই’র সম্মানিত সিনিয়র সহ-সভাপতি জনাব মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। তিনি বলেন, সেমিনারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানা গেছে। যা আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআই’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।