You are currently viewing বঙ্গবন্ধুর কৃষি ভাবনা: আগামীর চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

বঙ্গবন্ধুর কৃষি ভাবনা: আগামীর চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

  • Post comments:0 Comments

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নীতিনির্ধারণ ও প্রায় ২০০ বছর ধরে অবহেলিত কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন এবং শিল্প- বাণিজ্যের পুনরুদ্ধার: মোঃ জসিম উদ্দিন

বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস-২০২১ উপলক্ষ্যে এফবিসিসিআই’র ”বঙ্গবন্ধুর কৃষি ভাবনা: আগামীর চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা” শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারের স্বাগত বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সভাপতি বলেন, স্বাধীনতার পর প্রথম বঙ্গবন্ধু যখন রাষ্ট্র পরিচালনার হাল ধরেন তখন বঙ্গবন্ধুর জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল অনেক। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, অর্থনীতির ভগ্ন অবস্থা, কলকারখানায় উৎপাদনবন্ধ, বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার দেশে বঙ্গবন্ধুর নিকট সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য নীতিনির্ধারণ করা ও প্রায় ২০০ বছর ধরে অবহেলিত কৃষি এবং কৃষকের উন্নয়ন এবং শিল্প ও বাণিজ্য-কে পুনরুদ্ধার করা।

স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার গঠনের পরপরই বঙ্গবন্ধু কৃষি উপকরণ, কৃষি গবেষণা, নতুন জাত উদ্ভাবন ও কৃষিখাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যাবহার ইত্যাদিকে গুরুত্ব দিয়ে কৃষিখাতে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সবুজ বিপ্লবের ডাক দেন। কৃষি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে বাজেটে ৬০ ভাগ পল্লী এলাকায় উন্নয়নের জন্য ব্যয়ের ঘোষণা দেয়া হয়। এছাড়া যুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু প্রায় ২২ লাখেরও বেশি কৃষক পরিবারের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেন।

এফবিসিসিআই সভাপতি আরও জানান, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষিখাতের উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের আজ ১৩খাতে বিশ্বে প্রথম ১০টি স্থানে রয়েছে। কাঁচা পাট রপ্তানি এবং ইলিশ উৎপাদনে বিশ্বে ১ম, পাটপণ্য উৎপাদন, কাঠাল এবং ছাগল উৎপাদনে ২য়, মিঠা পানির মাছ ও সবজি উৎপাদনে ৩য়, চাল উৎপাদনে ৪র্থ, আলু উৎপাদনে ৬ষ্ঠ এবং আম ও পেয়ারা উৎপাদনে আমরা বিশ্বে ৮ম স্থানে রয়েছি।

তিনি আরও বলেন, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পপণ্য এবং পচনশীল কাঁচা সবজি, আলু, ফলমূল, ও বীজ জাতীয় ফসল দীর্ঘ সময় রাখার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক আধুনিক হিমাগার স্থাপনে দেশ এখনো পিছিয়ে আছি। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে এসব হিমাগার প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরী।

”বঙ্গবন্ধুর কৃষি ভাবনা: আগামীর চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা” শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। সেমিনারে তিনি বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সহ সকল দিক সংবলিত একটি সুন্দর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। রাজনৈতিক দর্শনে গ্রাম বাংলার সাথে তার ছিলো

গভীর সংযোগ। কৃষক সন্তান সহ বাঙালী জাতিকে তিনি গভীর ভালোবাসতেন। এছাড়া কৃষিতে বর্তমান সরকারের ব্যাপক প্রণোদনা উন্নয়নে সহায়ক হয়েছে এবং এতে তরুনরাও উৎসাহিত হচ্ছে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন কৃষি মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময় কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নেই কাজ করে গেছেন। আজ বিদ্যুৎ সহ অনেক খাতেই আমরা স্বয়ংসম্পূর্ন। কৃষিতে আমাদের উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। দেশে ও দেশের বাইরে পণ্যের গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে হবে।

এসময় কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে ২% সুদে ঋন প্রদান করে কৃষি শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করবেন বলে জানান প্রধান অতিথি। এর মাধ্যমে কৃষি বিপ্লব ঘটবে, কৃষকরা সরাসরি লাভবান হবে। এছাড়া এ বছরে আলুর উদবৃত্ত উৎপাদন হওয়ার কারনে আলু থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। তিনি জানান, আজকের কৃষির যতটুকুই উন্নয়ন, তার ভিত রচনা করে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কৃষিতে ব্যাপক রুপান্তর ঘটাতে চেয়েছিলেন তিনি।  স্বাধীনতার পরে যখন কোষাগার ছিলো শূন্য, কৃষিতে ছিলো নাজুক অবস্থা; সে সময়েই কৃষকের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা থেকে বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন কৃষি প্রতিষ্ঠান তৈরী করেন।

এর আগে প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নিয়েছেন পলিসি রিসার্চ ইনষ্টিটিউট এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিঃ এন্ড চ্যানেল আই এর ফাউন্ডার পরিচালক জনাব শাইখ সিরাজ এবং প্রান গ্রæপ এর চেয়ারম্যান জনাব আহসান খাঁন চৌধুরী।

সেমিনারে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন এফবিসিসিআই’র সম্মানিত সিনিয়র সহ-সভাপতি জনাব মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। তিনি বলেন, সেমিনারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানা গেছে। যা আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআই’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.